অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল ও তার ইউরোপীয় সহযোগীদের অবমাননাকর বক্তব্যের পর বিশ্ববাসীকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এক বিতর্কিত বক্তব্যকে ঘির বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
৮০ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যে সিনেটে সংখ্যালঘু নেতা ম্যাককনেলের সঙ্গে সাক্ষাতে অবকাঠামো ক্ষেত্রে বাজেট পাশের বিষয়ে তার সরকারের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আগামীতে আমাদের সুদিন আসছে এবং আমাদের পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না’। আমি ১৪০টিরও বেশি দেশ সফর করেছি উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, পুরানো প্রতিবেশী ছাড়া বিশ্বের বাদবাকী দেশগুলো আমাদের জিন্স প্যান্টের তালির সমতুল্যও নয় এবং আমরা যা চাই তাই করতে পারি।
বাইডেনের এ বক্তব্য ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং সর্বত্র প্রশ্ন উঠেছে জিন্স প্যান্টের তালি বলতে তিনি ঠিক কি বুঝিয়েছেন। আমেরিকার রক্ষণশীল রাজনৈতিক বিষয়ক কলামিস্ট ও ব্লগার বাজ প্যাটারসন এক টুইটবার্তায় বাইডেনের এ বক্তব্যের বিষয়ে বলেছেন, ‘বাইডেন এ কি বললেন?’ মার্কিন প্রকাশনা ন্যাশনাল রিভিউ এর প্রতিবেদক ক্লদ থমসনের বিস্ময়বোধক মন্তব্য ছিল ‘কি!!’। কোভিন ম্যাকমোহন টুইটবার্তায় বলেছেন, ‘পুরানো প্রতিবেশী বলতে তিনি ঠিক কি বুঝিয়েছেন?’ মার্কিন সিনেটের প্রেস সেক্রেটারি অ্যাবিগেল ম্যারন বাইডেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘তার মাথা পুরাই ঢিলা হয়ে গেছে।’
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যদিও প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সমালোচকরা অবাক হয়েছেন এবং বিস্ময়সূচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমেরিকার অতীত প্রেসিডেন্টদের কার্যকলাপ ও দৃষ্টিভঙ্গির দিকেও নজর দিলে দেখা যাবে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে তারা সবসময় অন্য দেশ এমনি পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোর সাথেও স্বেচ্ছাচারী আচরণ করতো এবং সবাইকে ছোট করে দেখতো। স্বেচ্ছাচারিতা মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য যা কিনা বিশ্বজুড়ে সবসময়ই সমালোচিত হয়ে আসছে। এমন খোদ ইউরোপীয় মিত্ররাও ওয়াশিংটনের স্বেচ্ছাচারী আচরণকে ভালোভাবে নেয়নি।
মার্কিন সরকার গত দুই দশক ধরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে আফগানিস্তান ও ইরাকসহ অনেক দেশে যুদ্ধ বাধিয়েছে এবং সিরিয়ায়ও হস্তক্ষেপ করে বাশার আল আসাদ সরকারের পতন ঘটানোর চেষ্টা করেছে। বলা যায়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতা ও অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছে এবং আইএস জঙ্গিদেরকে লেলিয়ে দিয়ে সন্ত্রাসবাদের ভয়াবহ বিস্তার ঘটিয়েছে। আমেরিকার এ স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপের কারণে পশ্চিম এশিয়ায় সন্ত্রাসীদের হাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে পরিস্থিতির আরো বেশি অবনতি হয়েছে। তারা যে শুধু চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ও রাজনৈতিক শত্রুতায় জড়িয়েছে তাই নয় এমনকি ইউরোপীয় মিত্রদের সাথেও বিরোধে জড়িয়েছে। এশিয়ার দেশগুলোকে কব্জায় আনতে আমেরিকা অন্যায় নিষেধাজ্ঞার আশ্রয় নিয়েছে এবং নিষেধাজ্ঞাকে তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। প্রয়োজনে সামরিক শক্তিও ব্যবহার করছে। এ অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন অন্য দেশকে আমাদের জিন্স প্যান্টের তালির সমতুল্যও নয় বলে যে মন্তব্য করেছেন তা খুবই হাস্যকর এবং অবমাননাকর।
Leave a Reply